সরস্বতী পুজোর আগে কেন কুল খেতে নেই? জানুন এর আসল কারণ

সরস্বতী পুজোর আগে কেন কুল খেতে নেই? জানুন এর আসল কারণ

সরস্বতী পুজোর সঙ্গে যে ফলটা খুবই পরিচিত তা হল কুল। সরস্বতী পুজোর প্রসাদে এই ফল থাকবেই থাকবে। টক-মিষ্টি স্বাদের ছোট্ট এই ফল বাচ্চা থেকে বয়স্ক সকলেরই খুব প্রিয়। কিন্তু ছোটো থেকে আমরা সবাই শুনে আসছি যে সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেতে নেই, তাহলে নাকি সরস্বতী ঠাকুর রেগে যান এবং পরীক্ষায় পাশ করা যায় না। বাড়ির বড়রা ছোটোদের প্রায়ই বলে থাকেন এই কথা। পুজোর অঞ্জলি দিয়ে তার পরেই প্রসাদে কুল খাওয়ার রীতি প্রচলিত বহুদিন ধরে। তবে এর পিছনের আসল কারণ জানেন কি?

পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, দেবী সরস্বতীকে তুষ্ট করার জন্য মহামুনি ব্যাসদেব দীর্ঘদিন তপস্যা করেছিলেন। ব্যাসদেবের তপস্যা শুরুর আগে তাঁর তপস্যাস্থলের কাছে দেবী একটি কুল বীজ রেখে বলেন যে, এই কুলবীজ অঙ্কুরিত হয়ে চারা হবে, তারপর বড় গাছ হবে, সেই গাছের কুল যেদিন পেকে ব্যাসদেবের মাথায় পড়বে, সেই দিনই দেবী সন্তুষ্ট হবেন। ব্যাসদেবও সেই শর্ত মেনে নিয়ে তপস্যা শুরু করলেন।

আরো পড়ুনঃ
মহাভারতের যুদ্ধে অভিমন্যুকে কেন বাঁচালেন না শ্রী কৃষ্ণ || ভগবান শ্রী কৃষ্ণ এমন কেন করলেন?


সেই কুল বীজ থেকে বড় গাছ হয়ে, সেই গাছের কুল যেদিন ব্যাসদেবের মাথায় পড়ে, তখন তিনি বুঝতে পারেন যে দেবী সরস্বতী তাঁর প্রতি তুষ্ট হয়েছেন। সেই দিনটি ছিল পঞ্চমী। সেই দিন সরস্বতীকে কুল নিবেদন করে ব্যাসদেব ব্রহ্মসূত্র রচনা আরম্ভ করেছিলেন।


তাই এই দিনের আগে আমরা কুল খাই না। শ্রীপঞ্চমীর দিন সরস্বতী দেবীকে কুল নিবেদন করার পরেই কুল খাওয়া হয়। কিন্তু কোনও লোকাচার বা শাস্ত্রের নিয়ম তো ছোটোরা বোঝে না বা মানতে পারে না। তাই বাড়ির বড়রা তাদের এই বলে ভয় দেখান যে, সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেলে পরীক্ষায় পাশ করা যায় না।

আরো পড়ুনঃ
সনাতন ধর্ম অনুযায়ী, গাভী ও বৃষ হত্যা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, এ বিষয়ে জেনে নিন শাস্ত্র কি বলে?


তবে স্বাস্থ্যগত কারণেও সরস্বতী পূজার আগে কুল খাওয়া ঠিক নয়। সরস্বতী পুজোর সময় বা তার আগে শীতকাল চলে। এই সময়ে বিভিন্ন রকমের রোগ দেখা দেয় চারিদিকে। সর্দি-কাশি, জ্বর, পেটের সমস্যা ঘরে ঘরে লেগে থাকে এই সময়ে। তাছাড়া, মাঘ মাসের মাঝামাঝি সময়ের আগে কুল কাঁচা বা কশযুক্ত থাকে। আধ পাকা বা কাঁচা কুল খেলে পেটের সমস্যা বা শরীরের অন্যান্য আরও ক্ষতি হতে পারে।

Previous Post Next Post