গীতা পাঠ করার পূর্বের নিয়মাবলী | যে মন্ত্র পড়ে পবিত্র গীতাপাঠ শুরু করতে হয়?

গীতা পাঠ করার পূর্বের নিয়মাবলী | যে মন্ত্র পড়ে পবিত্র গীতাপাঠ শুরু করতে হয়? সনাতনহিন্দু২৪.কম : মনের পবিত্রতার সহিত পবিত্র বস্ত্র পরিধান করে শ্রীগীতা পাঠের জন্য পবিত্র স্থান বা আসন পেতে উত্তর বা পূর্ব-মুখ করিয়া বসিবেন। ইহার পর আচমনীয়, বিষ্ণু-স্মরণ, সূয্যার্ঘ্য, স্বস্তিবাচন, সংকল্প, আসনাদি শুদ্ধি ইত্যাদির পর নিম্ন কার্যগুলি করিবেন–

প্রথমতঃ গুরুদেবের প্রণাম মন্ত্র পাঠ করিবেন– গুরুদেবের প্রণাম মন্ত্রঃ

“ওঁ অখন্ডমন্ডলাকারং ব্যাপ্তং যেন চরাচরম্। তৎপদং দর্শিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবেই নমঃ।। ওঁ গুরু ব্রহ্ম গুরু বিষ্ণু গুরু দেব মহেশ্বর। গুরুরেব পরম ব্রহ্ম তস্মৈ শ্রীগুরুবেই নমঃ।।”

সঙ্গে পিতা-মাতাকে প্রণাম করিতে পারেন–

“পিতা স্বর্গ, পিতা ধর্ম, পিতাহি পরম তপঃ। পিতোরি প্রিতিমাপন্নে প্রিয়ন্তে সর্ব দেবতাঃ।। মাতা জননী ধরিত্রী, দয়াদ্র হৃদয়া সতী। দেবীভ্যো রমণী শ্রেষ্ঠা নির্দ্দোশা সর্ব দুঃখ হরা।।“]]

দ্বিতীয়তঃ হাত জোড় করিয়া
“ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায় নমঃ“ - মন্ত্রটি তিন(৩)বার

পাঠকরত শ্রীগীতাকে পুষ্পাঞ্জলি অর্ঘ্য অর্পণ করিবেন। যদিও বা এখন চাইলে গীতা খুলতে পারবেন; তবে মনে রাখুন– গীতা খোলার পূর্বে “ ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায় নমঃ“ -তিনবার অবশ্যই পাঠ করিবেন।



আরো পড়ুন :
শ্রীমদ্ভগবদ গীতা ও মহাভারত থেকে এই ১০টি প্রশ্নের উত্তর সকল সনাতনীর জানান উচিত

তৃতীয়তঃ এরপর নিম্নের মন্ত্রগুলি হাত-জোড়পূর্বক পাঠ করিবেন–

“ওঁ অস্য শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা মালা মন্ত্রস্য শ্রীভগবান্ বেদব্যাস ঋষির্ অনুষ্টুপঃ ছন্দঃ শ্রীকৃষ্ণ পরমাত্মা দেবতা।” “অশোচ্যান্ অন্বশোচস্ ত্বম্ প্রজ্ঞাবাদান্’স্ চ ভাষসে”- ইতি বীজম্। “সর্বধর্মান্ পরিত্যাজ্য মাম্ একম্ শরণং ব্রজ”- ইতি শক্তিঃ। “অহম্ ত্বাম্ সর্বপাপেভ্যো মোক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ”- ইতি কীলকম্।

চতুর্থতঃ শ্রীমদ্ভগবদ্ গীতার ধ্যান বা মঙ্গলাচরণম্ হাত-জোড়পূর্বক পাঠ করিবেন– গীতার মঙ্গলাচরণম্ঃ

“ওঁ হরি ওঁ তৎ সৎ, ওঁ নমো ভাগবতে বাসুদেবায় ওঁ, অথঃ শ্রীমদ্ভগবদ্ গীতার মঙ্গলাচরণম্ প্রারম্ভম্… “ওঁ পার্থায় প্রতিবোধিতাং ভগবতা নারায়ণেন স্বয়ম্।

গীতার মঙ্গলাচরণম্ঃ
“ওঁ ইতি শ্রীমদ্ভাগবত গীতার মঙ্গলাচরণম্ সমাপ্তম্।।”

পঞ্চমতঃ শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা পাঠ করিবেন– পাঠবিধিঃ(হাত-জোড়পূর্বক)

“ওঁ হরি; ওঁ তৎ সৎ, অথঃ শ্রীমদ্ভাগবদ্গীতা; অমুক অধ্যায়; অমুক-যোগ; অমুক-উবাচ;–

গীতাপাঠ শুরু



এরপর (পড়া শেষ করলে) হাত-জোড়পূর্বক পাঠ করিবেন–

“ওঁ তৎ সৎ ইতি শ্রীমদ্ভগবদ্গীতাসু উপনিষৎসু ব্রহ্মবিদ্যায়াং যোগশাস্ত্রে শ্রীকৃষ্ণার্জুন সংবাদে অমুক-যোগ নামকং অমুক-অধ্যায়ঃ / একাংশেনঃ (যদি কয়েকটি শ্লোক পড়া হয় তবে এটি বলতে হবে) সমাপ্তম্।”

ষষ্ঠতঃ শ্রীশ্রী গীতার মাহাত্ম্য পাঠ করিবেন। যে কোন একটি মাহাত্ম্য পাঠ করা যাবে।

সপ্তমতমঃ ক্ষমাভিক্ষার মন্ত্র পাঠ করিবেন– ক্ষমাভিক্ষা মন্ত্রঃ

“ওঁ যদক্ষরং পরিভ্রষ্টং মাত্রাহীনঞ্চ যদ্ ভবেৎ। পূর্ণং ভবতু ত্বৎ…সর্ব্বং ত্বৎ প্রসাদাৎ জনার্দ্দন।।” “জয় গীতা,জয় গীতা,জয় গীতা…"

অষ্টমতঃ শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার গুহ্য নামসমূহ পাঠ করিবেন–
গীতার গুহ্য নামসমূহঃ
“ওঁ গঙ্গা গীতা চ সাবিত্রী সীতা সত্যা পতিব্রতা। ব্রহ্মাবলির্ব্রহ্মবিদ্যা ত্রিসন্ধ্যা মুক্তিগেহিনী।। অর্ধমাত্রা চিতা নন্দা ভবঘ্নী ভ্রান্তিনাশিনী। বেদত্রয়ী পরানন্দা ত্বত্তার্থ জ্ঞানমঞ্জুরী।।” (সঙ্গে এর পরের শ্লোকটাও পাঠ করিতে পারেন)

নবমতমঃ ভগবানের প্রণাম মন্ত্র পাঠ করিবেন– প্রণাম মন্ত্রঃ

“হে কৃষ্ণ করুণাসিন্ধো দীনবন্ধু জগৎপতে। গোপেশ গোপীকা-কান্ত রাধাকান্ত নমোহস্তুতে।। তপ্ত কাঞ্চন গৌরাঙ্গি রাধে বৃন্দাবনেশ্বরি। বৃষভানুসুতে দেবী প্রণামামি হরি প্রিয়ে।।”

দশমতমঃ সপ্ততত্ত্ব-সহ তারকব্রহ্ম মহানাম জপ করিবেন–
সপ্ততত্ত্বসহ মহানামঃ
“জয় শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ শ্রীঅদ্বৈত গদাধর শ্রীবাসাদি গৌর ভক্তবৃন্দ। হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে। হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।”

একাদশতমঃ শান্তিময় মন্ত্র পাঠ করিবেন– শান্তিমন্ত্রঃ

“সর্বে সুখিনঃ ভবন্ত, সর্বে সন্ত নিরাময়াঃ। সর্বে ভদ্রাণী পশ্যন্ত, মা কশ্চিদ্ দুঃখ ভাগ ভবেৎ।।” ওঁ শান্তি (৩ বার)

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post