জেনে নিন খাবার গ্রহণের আগে ও পরে কি মন্ত্র উচ্চারণ করবেন?

প্রতিটি সনাতন ধর্মালম্বীর কর্তব্য ভোজনের প্রারম্ভে ও শেষে পবিত্রবেদ মন্ত্র স্মরণ করা।প্রাচীন কালে আমাদের পূর্বপুরুষ সকল বৈদিক মহাত্মাগণ তা করলেও কালের আবর্তে আজ তা আমরা ভুলতে বসেছি।চলুন দেখে নিই পবিত্র বেদের কোন কোন মন্ত্রে ভোজনের প্রারম্ভ ও শেষ করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ
বিশ্বকর্মাকে ঘিরে রয়েছে কোন পৌরাণিক কাহিনি || বিশ্বকর্মা পূঁজায় কেন মেসিন পূঁজা করা হয়?



ভোজন শুরু করার মন্ত্রঃ “ওম্ অন্নপতেন্নস্য নো দেহ্যনমীবস্য শুষ্মিণঃ। প্র প্র দাতারং তারিষ ঊর্জং নো ধেহি দ্বিপদে চতুষ্পদে।।” (পবিত্র যজুর্বেদ ১১।৮৩)

সরলার্থঃ”হে অন্নের স্বামী! তুমি আমাদের সুস্বাস্থ্যযুক্ত ও বলপ্রদায়ক অন্ন প্রদান করো। দীন দুঃখী ও অভাবে পীড়িতদের অন্ন প্রদান করে তাদের প্রতি কৃপা দৃষ্টি দিও। দ্বিপদী মানুষ,সকলের পরিবার ও চতুষ্পদী প্রাণীসহ সমগ্র জগতের জন্য অন্ন, বল ও পরাক্রম প্রদান করো।”অর্থাৎ ভোজনের প্রারম্ভে শুধু নিজের নয়,সমগ্র বিশ্বের সকলের,সব দরিদ্র পীড়িতের,নিরীহ প্রাণীদের জন্যেও যেন খাদ্য জুটে,খাদ্য গ্রহণের প্রারম্ভে তার প্রার্থনা করাও প্রতিটি আর্যের কর্তব্য।

আরো পড়ুনঃ
দীপাবলি কি দীপাবলি ইতিহাস? দীপাবলি কেন পালন করা হয়?

ভোজন শেষের মন্ত্রঃ “ওম্ মোঘমন্নং বিন্দতে অপ্রচেতাঃ সত্যং ব্রবীমি বধ ইৎস তস্য। নার্য়মণং পুষ্যতি নো সখায়ং কেবলাঘো ভবতি কেবলাদী।।”

(পবিত্র ঋগ্বেদ, ১০।১১৭।৬) সরলার্থঃ”মূঢ় ব্যক্তি অন্নকে ব্যর্থপ্রাপ্ত করেছে, তারা অন্নের ঘাতক কারণ যারা অন্নকে প্রাপ্ত করার পরে সমাজ ও রাষ্ট্রকে কিছু দেয় না তথা নিজ বন্ধুবর্গকে অন্ন প্রদান করে না,দরিদ্র পীড়িত অভুক্তকে রেখে কেবল একাই উপভোগ করে বস্তুতঃ সে খাদ্যের নামে পাপ ই ভক্ষণ করে। হে ঈশ্বর! আমাদের পর্যাপ্ত অন্ন প্রদান করো যেন আমরা সবাই মিলে মিশে তা উপভোগ করি।”অর্থাৎ পাশের অভুক্তকে রেখে একজন প্রকৃত কখনো একাই কেবল খাদ্যভোগ করেন না,যে ব্যাক্তি অন্যকে অভুক্ত রেখে ভক্ষণ করে সে প্রকারান্তরে পাপ ই ভক্ষণ করে।তাই কেবল নিজের একার নয়,অসহায় প্রতিবেশী, বন্ধু,দরিদ্রের দিকেও নজর দেয়ার সংকল্প নিয়েই একজন বৈদিক ধর্মালম্বী খাদ্য ভোজন সমাপ্ত করবেন।

Credit: বাংলাদেশ অগ্নিবীর

Post a Comment

0 Comments